আগামীর উদ্যোক্তা মহাসম্মেলনে পুরস্কার পান নারী উদ্যোক্তারা। যশোর প্রেসক্লাব মিলনায়তনে।
ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে নারীরা হলেন উদ্যোক্তা, সংসারে আনলেন সুদিন | প্রথম আলো
শিহাব উদ্দীন
মিডিয়া কাভারেজ বিভাগ।
487 Views.
0 Comment.
0 Reply.
প্রথম আলোর মূল প্রতিবেদন লিংকঃ সিনিয়র সাংবাদিক মনিরুল ইসলাম
https://www.prothomalo.com/bangladesh/district/dgj3m8f1j7
--
যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার সানজিদা খাতুনের বিয়ে হয়েছে ১৪ বছর আগে। সব সময়ই তিনি ভাবতেন নিজে কিছু করবেন। অবশেষে করোনা পরিস্থিতির মধ্যে ২০২১ সালে অর্গানিক ফুড (প্রাকৃতিক খাদ্য) প্রক্রিয়াজাত করে বিক্রির উদ্যোগ নেন। ২ হাজার ২০০ টাকা দিয়ে শুরু করা ব্যবসাটি এখন তিন বছরে ১২ লাখ টাকার ব্যবসায় পরিণত হয়েছে।
শুধু সানজিদা নন, তাঁর মতো ১৭৩ নারী উদ্যোক্তার সংগ্রামের গল্প অনেককে উদ্যোক্তা হতে উৎসাহ দিচ্ছে। আগামীর উদ্যোক্তা ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে এসব নারী নিজের ঠিকানা যেমন খুঁজে পেয়েছেন, তেমনি সংসারে এনেছেন সচ্ছলতা। ২০২৪ সালের ২৭ ডিসেম্বর এই প্ল্যাটফর্মের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ পণ্য বিক্রি করা ৬০ নারী উদ্যোক্তাকে পুরস্কৃত করা হয়েছে। যাঁদের প্রত্যেকের মাসিক বিক্রি ৫০ হাজার থেকে দেড় লাখ টাকা পর্যন্ত। তাঁরা ২০২৪ সালে মোট বিক্রি করেছেন ১ কোটি ৪৭ লাখ টাকার পণ্য।
শিহাব উদ্দীন বলেন, আমাদের আগামীর উদ্যোক্তা ই-কমার্স অ্যাপ নারী উদ্যোক্তা সৃষ্টির জন্য নির্মাণ করা হয়। এখানে ৬০০ নারী উদ্যোক্তার বেশি নিবন্ধন করেছেন। তিন মাসের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে নারীদের দক্ষ করে তোলা হচ্ছে। প্রশিক্ষণ শেষে অনলাইনে পরীক্ষার মাধ্যমে তাঁদের দক্ষতা যাচাই করা হয়। এমন দক্ষ প্রায় ১৭৩ নারী উদ্যোক্তা রয়েছেন এই প্ল্যাটফর্মে। যাঁরা ভালো ব্যবসা করছেন। যার পুরোটাই হচ্ছে বিনা মূল্যে। নারী উদ্যোক্তাদের ৯ সদস্যের একটি কমিটি রয়েছে। এই কমিটির মাধ্যমে নারীদের সমস্যা ও সম্ভাবনা যাচাই–বাছাই করা হয়।
শিহাব উদ্দীন জানান, তিনটি অ্যাপের মাধ্যমে ব্যবসাটি পরিচালিত হচ্ছে। উদ্যোক্তাদের জন্যে আগামীর উদ্যোক্তা, ক্রেতাদের জন্য আপুর রান্না ও পণ্য পৌঁছে দেওয়া বাইক রাইডারদের জন্য উদ্যোক্তা রাইডার অ্যাপ আছে। ক্রেতারা আপুর রান্না অ্যাপ থেকে কোনো পণ্যের ফরমায়েশ দিলে ‘আগামীর উদ্যোক্তা’ অ্যাপের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট উদ্যোক্তার মুঠোফোনে খুদে বার্তা পৌঁছে যায়। এরপর ফরমায়েশটা নিশ্চিত করলে উদ্যোক্তা রাইডার অ্যাপের মাধ্যমে সরবরাহকারী তা ক্রেতার কাছে পৌঁছে দেন।
যশোর শহরতলির মুড়ুলী এলাকায় বাড়িতেই গড়ে উঠেছে সুলতানার রান্নাঘর। বাড়ির আঙিনার এই রান্নাঘর ২০২৪ সালে ১৫ লাখের বেশি টাকার খাদ্যপণ্য বিক্রি হয়েছে। এই রান্নাঘরের উদ্যোক্তা সুলতানা নিজের নামটুকুই শুধু লিখতে পারেন। তাঁকে সহযোগিতা করছেন তাঁর স্বামী, শাশুড়ি ও বড় ছেলে শুভ। করোনার মধ্যে সুলতানা তাঁর ছেলে শুভর মাধ্যমে আগামীর উদ্যোক্তা অ্যাপে নিবন্ধন করে উদ্যোক্তা হয়ে ওঠেন।
সুলতানা বলেন, করোনার মধ্যে স্বামীর কাজ ছিল না, সংসারে অভাব-অনটন চলছিল। তখন তাঁর ছেলে শুভর মাধ্যমে আগামীর উদ্যোক্তা প্ল্যাটফর্মে যুক্ত হন। এরপর বাড়িতে তৈরি করা খাদ্য সরবরাহের কাজ শুরু করেন। তাঁর রোজগারের টাকায় বাড়ির দোতলার ছাদের কাজ শেষ করেছেন। এখন তাঁরা অনেক ভালো আছেন।
আগামীর উদ্যোক্তা প্ল্যাটফর্মের সভাপতি নাহিদ সুলতানা বলেন, আমাদের অ্যাপে ২০ হাজারের বেশি ক্রেতা আছেন। তাঁরাই সারা বছর আমাদের নারী উদ্যোক্তাদের কাছ থেকে অনলাইন খাদ্যসামগ্রী কেনেন। প্রতিবছর ক্রেতাদের ভোটে ৯ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়। ১০ জনের একটি করে টিম গঠন করা আছে। তাঁদের একজন করে প্রতিনিধি রয়েছেন। তাঁদের মাধ্যমে সব সমস্যা সমাধান করা হয়।
Direct Share Link :